কঠিন হয়ে গেল তারেকের যুক্তরাজ্যে থাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় হয়েছে লেবার পার্টির। দীর্ঘ ১০ বছর পর লেবার পার্টি সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। লেবার পার্টির এই সরকার গঠনের ফলে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার যুক্তরাজ্যে থাকা কঠিন হয়ে পড়লো। লেবার পার্টি দীর্ঘদিন ধরেই তারেক জিয়ার যুক্তরাজ্যে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আসছিল। রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা কোন ব্যক্তি যুক্তরাজ্যে বসে রাজনীতি করতে পারে কিনা এই প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে লেবার পার্টির একাধিক পার্লামেন্টইন এর পক্ষ থেকে।

কনজারভেটিভ পার্টির আনুকূল্যে এবং সহযোগিতার কারণেই লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া সেখানে থাকতে পেরেছিলেন। এর আগে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছিলো কিন্তু সেই সময় এই অভিযোগেরও তদন্ত করেনি তৎকালীন কনজারভেটিভ সরকার। তারেক জিয়া সেখানে একটি কোম্পানি খুলে অবৈধভাবে লেনদেন করেছিলেন। এই অভিযোগে যুক্তরাজ্যে একটি তদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো। কিন্তু কনজারভেটিভ পার্টির কিছু নেতার অনাগ্রহের কারণে শেষ পর্যন্ত সেই তদন্ত ধামাচাপা দেয়া হয়।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এনিয়ে লেবার পার্টির অন্তত ৩ জন সদস্য বক্তব্য রেখেছিলেন। লেবার পার্টির অভিবাসন নীতিতে তিনটি বিষয় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রথমত, কোন দণ্ডিত ব্যক্তি যেন যুক্তরাজ্যের ভূখণ্ডে থাকতে না পারে। যে সমস্ত দেশ থেকে তারা অপরাধ করে এসেছেন সেই সমস্ত দেশের সঙ্গে চুক্তি করে দ্রুত তাদের ঐ দেশে ফেরত পাঠানোর নীতিতে বিশ্বাস করে লেবার পার্টি।’

দ্বিতীয়ত, লেবার পার্টি মনে করে যাদেরকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হয়েছে তা একটি মানবিক আশ্রয়। রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা কোন ব্যক্তি যুক্তরাজ্যে বসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবে না। এবং এটি যদি তারা করে তাহলে যে দেশ থেকে তিনি পালিয় এসেছেন সে দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। একারণেই লেবার পার্টি সবসময় রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা ব্যক্তিদের আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতি বন্ধের দাবি করে আসছিলো।

তৃতীয়ত, লেবার পার্টি সবসময় মনে করে যারা রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছে তাদের আয়-ব্যয়ের হিসেব নিয়মিতভাবে যাচাই-বাছাই করা উচিত। কারণ তারা যুক্তরাজ্যে থেকে কিভাবে বিপুল বিত্ত-বৈভবের জীবন-যাপন করছেন সে ব্যাপারে অনুসন্ধান করা উচিত।’

লেবার পার্টির এই ভূমিধস বিজয়ের ফলে এই বিষয়গুলো সামনে আসবে। সেক্ষেত্রে তারেক জিয়ার যুক্তরাজ্যে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে এক-এগারোর সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে তারেক জিয়া লন্ডনে গিয়েছিলেন। সেই মুচলেকায় বলা হয়েছে, তিনি আর কখনো রাজনীতি করবেন না। কিন্তু লন্ডনে গিয়ে আস্তে আস্তে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। এখন তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। লন্ডন থেকেই দলকে পরিচালিত করছেন এবং তার বিরুদ্ধে লন্ডনে নাশকতা, চাঁদাবাজি, অর্থ-পাচারসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এবার লেবার পার্টি যেহেতু নিঙ্কুশ জয় পেয়েছে সেকারণেই তারেক জিয়াকে দ্রুত জবাবদিহিতার আওতায় আসতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এছাড়াও বিগত কনজারভেটিভ সরকারই বাংলাদেশের সঙ্গে অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপারে ‘ফাস্ট-ট্র্যাক’ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলো এছাড়াও বাংলাদেশের সঙ্গে আসামি আদান-প্রদানের ব্যাপারেও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিলো। এসব চুক্তি কার্যকর হলে তারেক জিয়ার লন্ডনে থাকা সম্ভব হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এখন লেবার পার্টি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর বোঝা যাবে, তারেক জিয়ার ভাগ্য কিভাবে নির্ধারিত হয়।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রেম বঞ্চিত সংঘ’র বিক্ষোভ

তানজিলা আক্তার রাজশাহী, প্রতিনিধি: রাজশাহী, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ কেউ পাবে না কেউ পাবে না, তা হবে না তা হবে না’ শ্লোগানকে সামনে রেখে বিশ্ব ভালোবাসা

দেশের তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা’

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: শীতকে বিদায় দিয়ে বসন্তের হাওয়া বইছে চারপাশে। জানুয়ারিতে তীব্র শীত পার করে বর্তমানে গরম-শীতে মিশ্র আবহাওয়া পরিস্থিতির স্বাদ নিচ্ছে দেশের মানুষ।

তিস্তা নিয়ে ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে রাজি চীন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্পে ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে রাজি আছে চীন। তিনি বলেন, যে কোনো সিদ্ধান্তকে

৯০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন নিশ্চিত করতে ভারতের প্রতি আহবান জয়ের

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন যে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন সামলানোর ক্ষেত্রে ভুল হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের

সশস্ত্র গ্যাং নির্মূলে হাইতিতে বাহিনী পাঠাবে বাংলাদেশ’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কয়েকদিন আগে সশস্ত্র গ্যাংদের হামলায় কারাগার থেকে পালিয়ে যায় কয়েক হাজার বন্দী। এরপরই হাইতি সরকার জরুরি অবস্থা জারি করে। খবর রয়টার্সের এমন পরিস্থিতিতে

ট্রাম্পের টুইট পোস্টের জবাব দিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইট পোস্টের জবাব দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত হিসেবে সদ্য নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। বাংলাদেশ সময়