কিশোরগঞ্জ ও কটিয়াদী প্রতিনিধি: কটিয়াদী উপজেলায় এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করে এলাকার একটি বিলে ফেলে রাখা হয়েছিল। ওই নারীর বড়ভাই অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করলে পুলিশ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
হত্যায় ব্যবহৃত কোড়াল, নিহতের কানের দুল, দুল বিক্রির সিসি ফুটেজসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।
নিহত নারী কটিয়াদী উপজেলার ধুলদিয়া সহস্রাম ইউনিয়নের বাগপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ঘটনাটি ঘটে। মরদেহ উদ্ধার হয়েছে ১১ ডিসেম্বর।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. আল আমিন হোসাইন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।’
মামলার বর্ণনায় জানা যায়, নিহত ওই নারী তার বৃদ্ধা মা ও ছেলেকে নিয়ে বাগপাড়া গ্রামে বাবার বাড়ির পাশেই আলাদা বাড়িতে থাকতেন। ঘটনার দুই সপ্তাহ আগে তার ছেলে করিমগঞ্জের জয়কা এলাকায় বাবার বাড়িতে থাকবে বলে চলে যায়। নিহতের মা ৯ ডিসেম্বর বিকেলে অন্য মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। পরদিন বিকাল ৩টায় এসে ওই নারীর ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। তখন তিনি নারীর বড়ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখেন সেখানেও যাননি। পরে তারা ফিরে এসে দেখেন ওই নারীর ঘরের জানালার ওপরের টিন খোলা, ঘরে সিঁধ কাটা।
খবর পেয়ে তার ছেলে এসে ১১ ডিসেম্বর দুপুরে পার্শ্ববর্তী সতেরদ্রোণ এলাকার মাছুয়া বিলে গিয়ে মায়ের ভাসমান মরদেহ দেখে চিৎকার করতে থাকে। ঘটনা জানালে গচিহাটা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহতের বড়ভাই বাদী হয়ে ১২ ডিসেম্বর কটিয়াদী থানায় অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ হত্যাকাণ্ডে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয় পরিদর্শক মো. আক্তারুজ্জামানকে। এদিকে ১৪ ডিসেম্বর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় নিহতের মা মেয়ে হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মামলা দায়েরের পর থেকেই বাগপাড়া গ্রামের জাহেদ মিয়ার ছেলে রহমত উল্লাহ (৩০), একই গ্রামের মৃত রতন মিয়ার ছেলে মো. হৃদয় (২৪) ও পার্শ্ববর্তী পূর্ব পুরুরা গ্রামের মৃত দুলাল মিয়ার ছেলে আব্দুল মমিন ময়নাসহ (২০) ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. রিয়াজুল কাউসারের খাস কামরায় রহমত উল্লাহ অপরাধের বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন হোসাইন। পরে সবাইকে কারাগারে পাঠানো হয়।’