এল নিনোর কারণেই বাংলাদেশে এত গরম!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ। গত কয়েকদিন ধরে অসহনীয় তাপমাত্রা সহ্য করতে পারছেন না মানুষ। ফলে হিটস্ট্রোকসহ অন্যান্য স্বাস্থগত ঝুঁকিতে পড়ছেন মানুষ। শুধু বাংলাদেশ নয়, তালিকায় আগে ভারত, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডেও।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, এসব দেশে এপ্রিল মাসে সবচেয়ে বেশি তাপ পরিলক্ষিত হয়েছে। কিন্তু আবহাওয়ার বিশেষ অবস্থা ‘এল নিনোর’ কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এল নিনো এই অঞ্চলে উষ্ণ পানি ও শুষ্ক অবস্থা নিয়ে আসে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এটির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে।’

এখন প্রশ্ন হলো-এল নিনো কী? ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তথ্য অনুযায়ী, এল নিনো হলো একটি জলবায়ু প্যাটার্ন। এটির মাধ্যমে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের পানি উষ্ণ হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, সমুদ্রের তাপমাত্রা, গতি, মহাসাগরীয় স্রোত, উপকূলীয় মৎস্যসম্পদের স্বাস্থ্য এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে দক্ষিণ আমেরিকার এবং এরও বাইরের অঞ্চলের ওপর প্রভাব পড়ে। এল নিনো দুই থেকে সাত বছরের বিরতি দিয়ে অনিয়মিতভাবে হয়ে থাকে। এটি কোনো নিয়মিত চক্র নয় অথবা এ নিয়ে আগে থেকে কোনো ধারণা পাওয়া যায় না।

পেরুর উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা এল নিনো সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন সমুদ্রের পানির অস্বাভাবিক উষ্ণতা দেখে। আবহাওয়ার এই বিশেষ অবস্থাকে স্প্যানের অভিবাসীরা এল নিনো নামে ডাকতেন। যার বাংলা অর্থ ‘ছোট বালক’। পরবর্তীতে এল নিনোর মাধ্যমে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনের বিষয়টি বোঝানো শুরু হয়। এল নিনোর কারণে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলীয় দেশ পেরু, ইকুয়েডর ও চিলির উপকূলে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে এক প্রকার উষ্ণ সমুদ্র স্রোতের প্রবাহ লক্ষ করা যায়।’

এই উষ্ণ স্রোতের কারণে দক্ষিণ থেকে উত্তরমুখী শীতল সামুদ্রিক স্রোতের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন অঞ্চলের সমুদ্রে বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়, উদ্ভিদ প্ল্যাংকটনের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং মাছের উৎপাদন কমে যায় এবং স্থলভাগের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। এল নিনোর প্রভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ অঞ্চলে খরা বা অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। কোনো কোনো অঞ্চলে অতিবর্ষণও ঘটে থাকে। সাধারণত ২ থেকে ৪ বছর স্থায়ী হয় এল নিনো।

এদিকে রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আরও ৭২ ঘণ্টা এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ ২৮ এপ্রিল থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিও বৃদ্ধি পেতে পারে।

গত বছরের এপ্রিল মাসে জলবায়ুবিদরা এল নিনোর ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, ২০২৩ সালে এটির প্রভাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। যদি ২০২৩ সালে প্রভাব না পড়ে তাহলে ২০২৪ সালে এটি বেশ ভালোভাবে পরিলক্ষিত হবে।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

নির্বাচনে জয় পেতে ক্লান্তিহীন পরিশ্রম দরকার: অধ্যাপক নজরুল ইসলাম

আরিফ ইসলাম সোহেল, বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ): “আসন্ন জাতীয় নির্বাচন হবে অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ। বিজয়ী হতে হলে নিরলস পরিশ্রমের বিকল্প নেই।”—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও

সরকারি চাকরি সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে অচলাবস্থা, আজও চলবে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল সোমবার সকাল থেকেই

রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনের মামলার রায় ১৫ জানুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রাহকের দুই হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার ২২৭ টাকা পাচারের অভিযোগে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনের

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে বাবর

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সন্ধ্যায় বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট অনুভব করায় তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

সচ্ছল ব্যক্তিদের নামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর, বিক্রির হিড়িক

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: উপকূলে কেউ রাস্তার ধারে, কেউ সমুদ্র তীরে বসবাস করছেন। এখানকার অধিকাংশ ভূমিহীন বাসিন্দার মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। সে লক্ষ্যে সরকারের তরফ

ভোট কারচুপির দায় স্বীকার করে পাকিস্তানের নির্বাচন কর্মকর্তার পদত্যাগ’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার লিয়াকত আলী চট্টা পদত্যাগ করেছেন। দেশটিতে ৮ ফেব্রুয়ারির ভোটে কারচুপির দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেছেন তিনি। একইসঙ্গে রাজনৈতিক চাপে ভুল