নিজস্ব প্রতিবেদক: উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন্দল এখন নতুন করে দানা বেঁধেছে। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই কোন্দল বিভক্তি নতুন করে দেখা দিচ্ছে। কোন্দল বিভক্তি দূর করার জন্য প্রতিটি বিভাগ ওয়ারী বৈঠক বসছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কিন্তু এই সমস্ত বৈঠক কিছুতেই কোন ফল দিচ্ছে না। বরং এই সমস্ত বৈঠক হাসি, তামাশা এবং রং রসের কেন্দ্র হিসাবে পরিণত হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ স্থানীয় নেতারা বলছেন যে, এমপিদের ঠিক করতে না পারলে উপজেলায় কোন্দল বন্ধ হবে না। উপজেলায় কোন্দলের নাটের গুরু হলেন এমপিরাই। আওয়ামী লীগ এবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে, দলগত ভাবে তারা উপজেলা নির্বাচন করবে না। উপজেলায় দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা হবে না বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটির প্রধান কারণ ছিল দলের ভিতর অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং বিভক্তি হ্রাস করা।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরোধের ফলে দলটির কোন্দল এবং বিরোধ একটি ভয়ঙ্কর জায়গায় চলে গিয়েছিল এবং সেই কোন্দল বিভক্তি নিরসনের জন্য একের পর এক বিভিন্ন রকম উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু কিছুতেই সেই কোন্দল এবং বিভক্তি মেটানো সম্ভব হয়নি। আর এটি মেটাতে না পারার কারণেই উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করলে কী হবে? আওয়ামী লীগের এমপিরা এখন উপজেলা নির্বাচনে তাদের পছন্দের মাইম্যানকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করছেন এবং সেই প্রার্থীর পক্ষে পরোক্ষ প্রচারণা করছেন। প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।
অন্যদিকে এমপিরা যখন এই ধরনের প্রার্থী দিচ্ছেন এবং সেই প্রার্থী যখন স্থানীয় আওয়ামী লীগের মনঃপূত হচ্ছে না, তখন উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের অন্যরাও পাল্টা প্রার্থী দিচ্ছেন। এইভাবে প্রতিটি উপজেলায় চার থেকে পাঁচ জন প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে।’ কিন্তু বিরোধের সূত্রপাত ঘটাচ্ছেন এমপিরা।
আওয়ামী লীগের একজন বলছেন, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচন দলীয়ভাবে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং দলীয় পরিচয় ব্যবহার না করতে বলেছেন, সেহেতু এমপিদের প্রধান দায়িত্ব ছিল উপজেলা নির্বাচন থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখা। উপজেলা নির্বাচনে যেন তার কোন পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ না আসে, তিনি যেন নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকেন সেটা নিশ্চিত করা কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে, এমপিরাই উপজেলা নির্বাচনে মূল কলকাঠি নাড়তে চাইছেন। এমপিরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে উপজেলায় দাঁড় করাচ্ছেন এবং অন্যান্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার সৃষ্টি করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা প্রশাসনকে অন্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য এখন এক জটিল সমীকরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলার কোন্দল আওয়ামী লীগ কিছুতেই মেটাতে পারছে না। শুধু যে উপজেলাকে কেন্দ্র করেই এই বিরোধ হচ্ছে তা নয়, আওয়ামী লীগের এমপিরা এখন নতুন করে কোন্দল শুরু করেছেন। যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা নির্বাচনে বিরুদ্ধ পক্ষকে দমনের জন্য সর্বাত্মক অভিযান শুরু করেছেন। আবার আওয়ামী লীগের টিকিটে যারা এমপি হতে পারেননি স্বতন্ত্র থেকে এমপি হয়েছেন তারাও এলাকায় নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের কোন্দলের এখন মূল কলকাঠি নাড়াচ্ছেন এমপিরাই। এমপিদের কারণে কোন্দল থামছে না।’