আপনার জানার ও বিনোদনের ঠিকানা

এবার কোকা-কোলাকে লিগ্যাল নোটিশ, ১ লাখ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, গত ৯ জুন প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের দ্বারা শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়টিই স্পষ্ট হয়নি, পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনেছে কোকা-কোলা। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনে বাংলাদেশে প্রচলিত দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা ২৯৫ক এবং সাইবার সিকিউরিটি আইন, ২০২৩ এর ধারা ২৮ ও ৩৫ এর অধীনে কোকা-কোলা কোম্পানি অপরাধ করেছে।

এতে দাবি করা হয়, কোক স্টুডিও বাংলা বহুজাতিক কোম্পানি কোকা-কোলা কর্তৃক রোপিত একটি বিষবৃক্ষ। এই বিষবৃক্ষের বিষফল কয়েক বছর পরেই আমরা সরাসরি পেতে শুরু করব। এটি জাতীয়তাবাদের ভিত নড়বড়ে করার পাঁয়তারা। বিভিন্ন কালজয়ী সৃজনশীল মৌলিক শিল্পকর্মকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে আসছে কোক স্টুডিও বাংলা, তথা কোকা-কোলা। এর ফলে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৩ কে পদদলিত করা হচ্ছে। কোকা-কোলা কোক স্টুডিওর মাধ্যমে বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪০ ও ৪৩ এরও লঙ্ঘন করে চলছে প্রতিনিয়ত। এতে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০ সরাসরি আঘাতপ্রাপ্ত। এর ফলে বাংলাদেশের মানুষের সংস্কৃতি ও অস্তিত্ব বিরাট হুমকির মুখে নিপতিত হয়ে আছে। প্রত্যেক ভূ-খণ্ডের নিজস্ব সংস্কৃতি ও স্বকীয়তা থাকে, থাকে নিজস্ব দাবি। কৃষ্টি-কালচার ও সাহিত্য-সংস্কৃতিতে বাংলার রয়েছে নিজস্বতা। বাংলা সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী। জগাখিচুড়ি সংস্কৃতির আবহ গড়ে তোলা এবং বিজাতীয় সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে আকৃষ্ট করানোর মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের জাতীয়তাবাদ ও নিজস্ব রুচিশীলতায় পরিবর্তন আনার লক্ষ্য নিয়ে নেমেছে কোকা-কোলা। অথচ বাংলা সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ ভান্ডার ও অর্জনের মানহানি করে, শিল্প গুণাগুণ নষ্ট করে ও শৈল্পিক অর্জনকে বিকৃত করে কোকা-কোলা কোম্পানি সামগ্রিকভাবে অপরিসীম ক্ষতি করে আসছে বিগত দুই বছর ধরে।

এর ক্ষতিপূরণ টাকার অঙ্কে কোটির উপরে। সমৃদ্ধশালী, রুচিসম্মত শিকড়কে আঁকড়ে ধরা বাংলা সংস্কৃতিকে মনে ধারণ করলে দেশে সংবিধান ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে, প্রজন্ম হয়ে উঠবে দেশপ্রেমিক। পাশাপাশি কোকা-কোলার মতো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় নামবে ধস। দেশের মানুষ সচেতন হয়ে উঠবেন, মানুষের অস্তিত্বের ভিত আরও মজবুত হবে, পরের প্রজন্ম বাংলাকে করবে আরও সমৃদ্ধশালী। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে এবং সংবিধানের মূলনীতিকে আঘাত দিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করে সরাসরি রাষ্ট্রদ্রোহিতা করছে কোকা-কোলা।

নোটিশে আইনজীবী জায়েদ বিন নাসের বলেন, বিভ্রান্তিকর এই বিজ্ঞাপন দেখে আমার পরিবারের সদস্যসহ বাংলাদেশের আপামর জনতার অনেকেই গত ৯ জুনের পরে কোক ক্রয় করে পান করেছেন, যা ভোক্তার সঙ্গে চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রতারণা করার শামিল। এ ধরনের ঠকবাজির ফলে জনগণের সাংবিধানিক প্রতিবাদ কর্মসূচিকে যেমন নস্যাৎ করার চক্রান্ত করা হয়েছে ঠিক একইভাবে সাধারণ মানুষের মূল্যবোধ ও চেতনাকে আঘাতপ্রাপ্ত করা হয়েছে। কোকা কোলার অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও প্রতারণমূলক অপপ্রচারের ফলে অসামান্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশের জনগণের, যার সমস্ত দায়ভার কোকা কোলা কোম্পানির। আমার, আমার মক্কেলগণ, পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবসহ অগণিত মানুষের অর্থনৈতিক, বিশ্বাসমত ও সামাজিক মূল্যবোধে আঘাত হানা হয়েছে, যার মূল্যমান কোটি কোটি টাকার বেশি।

এতে তিনি বলেন, আমি নিজে বিইউপি আইন অ্যালামনাই সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলার লক্ষ্যে এবং ফিলিস্তিনের পক্ষ নিয়ে পৃথিবীব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ অন্তত ১০টি দেশের শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং অ্যালামনাই সংগঠনের (বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন) নেতৃবৃন্দ ও গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের কাছে চিঠি লিখেছি। আমার পাঠানো চিঠির পাণ্ডুলিপি লিগ্যাল নোটিশের সঙ্গে সংযুক্তি আকারে দেওয়া হয়েছে।

লিগ্যাল নোটিশ অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনগণ সংবিধানের ৩৭, ৩৮, ৩৯ ও ৪৩ অনুচ্ছেদের সরাসরি প্রয়োগ ঘটানোর মাধ্যমে কোকা কোলাকে বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। যে সিদ্ধান্ত দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৫ এর সঙ্গেও সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ। কোকা-কোলা বর্জনের মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেদের সাংবিধানিক ক্ষমতার সর্বোচ্চ সুপ্রয়োগ ঘটাচ্ছেন বাংলাদেশের জনগণ। কিন্তু মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করার মাধ্যমে কোকা কোলা কার্যত বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। যে দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই সেই দেশের সঙ্গে বন্ধুপ্রতিম ফিলিস্তিনের উপর অন্যায় ও

গত ৯ জুন প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে কোকা কোলার বিজ্ঞাপনে মিথ্যা তথ্য প্রদান স্পষ্টরূপে পরিষ্কার। জনগণের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কোকা-কোলা আর্থিকভাবে লাভবান হতে চেয়েছিল। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যে দেশে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে সে দেশের মানুষের মূল্যবোধ, চেতনা এবং বিশ্বাসকে আঘাত দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর পাঁয়তারা বরদাস্তযোগ্য নয়। পাশাপাশি যে দেশকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকার করে না সেই দেশের পক্ষে অবস্থান নিয়ে এবং সংবিধান লঙ্ঘন করে ও প্রচলিত আইনে নানা ধরনের গুরুতর অপরাধ করে কোকা-কোলা কোনোভাবেই বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে না।

গত ৯ জুন থেকে কোকা-কোলার যেকোনো ধরনের মুনাফা করা অনৈতিকই শুধু নয়, অবৈধও বটে। বন্ধুপ্রতিম দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা এবং বন্ধুপ্রতিম দেশের বিরুদ্ধাচরণ বাংলাদেশের সংবিধান এবং প্রচলিত ফৌজদারি আইনে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। কোকা-কোলা বাংলাদেশের সংবিধান এবং আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী। এই প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না।

একদিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণা করে ব্যবসায় মুনাফা করার লক্ষ্যে বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট করার অপচেষ্টা করেছে কোকা-কোলা; অন্যদিকে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের বিরুদ্ধে সুস্পষ্টভাবে ন্যক্কারজনক অবস্থান দেখা যাচ্ছে। গত ৯ জুনের পর কোকা-কোলা যত পণ্য বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি করেছে তার সম্পূর্ণ অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। এই বিজ্ঞাপন না সরালে কেন কোকা কোলার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে না তা জানানোর জন্য দ্য কোকা-কোলা কোম্পানি এবং কোকা-কোলা কোম্পানির বাংলাদেশি প্রতিনিধি কোম্পানি কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস লিমিটেডকে ৭ দিন সময় দেওয়া হচ্ছে।

নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ এর ধারা ৪১ মোতাবেক কোন ব্যক্তি কোন খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্য উপকরণ বিপণন বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে, প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত বিজ্ঞাপনের শর্তাদি লঙ্ঘন করে বিজ্ঞাপনে বিভ্রান্তিকর বা অসত্য তথ্য প্রদান করে অথবা মিথ্যা নির্ভরতামূলক বক্তব্য প্রদান করে ক্রেতার ক্ষতিসাধন করতে পারবেন না। অথচ কোকা কোলা মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে বিজ্ঞাপন বানিয়ে বাংলাদেশের ক্রেতা সাধারণের অসামান্য ক্ষতি সাধন করেছে, এই ক্ষতিপূরণের মূল্যমান কোটি টাকার বেশি।

বিগত বছরগুলোতে কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশে পরিবেশের যথেষ্ট ক্ষতিসাধন করেছে। কোকা কোলা প্লাস্টিক মোড়ক তৈরির বিষয়টি অন্য কোম্পানির উপর ছেড়ে দিয়েছে। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তার পেছনে কোকা কোলার মতো প্লাস্টিক মোড়ক ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান অনেকাংশে দায়ী।

সর্বোপরি কোকা-কোলার এহেন ছলচাতুরীর আশ্রয়ে তৈরিকৃত বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের জনগণের সামষ্টিক মান-সম্মানে আঘাত এনে কোকা-কোলা কোম্পানি ন্যূনতম ১০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি সাধন করেছে। শুধু দেশেই নয়, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশিদের সম্পর্কে ভুল বার্তা পৌঁছেছে। এ ধরনের ক্ষতি অপূরণীয় ও অবর্ণনীয়।’

বাংলাদেশিদের মানহানি করেছে কোকা-কোলা, যার মূল্যমান এক লাখ কোটি টাকার অধিক। দেশে, দেশের বাইরে সারা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের জনগণের মানহানি করায় দ্য কোকা-কোলা কোম্পানি এবং কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস লিমিটেডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে প্রচলিত আইনে প্রতিকার চেয়ে কেনো আদালতে মামলা-মোকদ্দমা দায়ের করা হবে না এবং কেনো অন্যান্য আইনসংগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানাতে ৭ দিন সময় দেওয়া হলো।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে আহমাদিনেজাদ বাদ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের ১৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য চূড়ান্তভাবে ছয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন, মাসুদ পেজেশকিয়ান, মোস্তফা পুরমোহাম্মাদী, সাঈদ জালিলি, আলী রেজা

তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে টানাপোড়েন

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে একটা অদৃশ্য টানাপোড়েন চলছে। চীন এখানে অর্থায়ন করতে চায়। কিন্তু ভারত বরাবর

গ্রামীণ’ নাম ব্যবহার করে ড.ইউনূসের যত জালিয়াতি’

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রামীণ ব্যাংকের অর্থে অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব গ্রহণ শুরু করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। ব্যাংকের বোর্ড সভার সিদ্ধান্তে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে ব্যাংকটির

অব্যাহতি পেলেন মুফতি আমির হামজা-ইজহারসহ ৬ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক: আলোচিত ইসলামি বক্তা মো. আমির হামজা, আলী হাসান উসামা ও মুফতি হারুন ইজহারসহ ছয়জনকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায়

রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন ভূমিষ্ঠ হওয়ায় পুত্রসন্তানের নাম “রামরহিম” রাখলেন মুসলিম দম্পতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন হয় গতকাল সোমবার’। এদিন ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ করা হয় রামলালার নতুন মূর্তিতে। নতুন মন্দির উদ্বোধনের দিন ফিরোজাবাদে এক মুসলিম

৫ দফা দাবিতে সিরাজগঞ্জ মৎস্য ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

জহুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার: ৫ দফা দাবিতে সিরাজগঞ্জ মৎস্য ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকালে বেলকুচি উপজেলার আজগড়া এলাকায় অবস্থিত ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ভবনের সামনে