উপদেষ্টা ফারুকীকে নিয়ে সমালোচনার ঝড়, নেপথ্যে কারণ কী?

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: অনেকটা চমক দেখিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে জায়গা করে নিয়েছেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। রবিবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর বঙ্গভবনে তিনি শপথ নেন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এই চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার ও নাট্য নির্মাতাকে। তবে তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে, ফারুকীকে উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়ায় সমালোচনা হচ্ছে সরকারেরও।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে উপদেষ্টা পদ থেকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত বিভিন্নজনের অভিযোগ, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে উপদেষ্টা করা গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হয়েছে। আসলে তাকে নিয়ে মানুষের ক্ষোভের কারণ কী?

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বিভিন্ন সময় তার লেখায় ও ফেসবুক পোস্টে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন। যার ফলে গত ১৫ বছর প্রিয়ভাজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের। এ সুবাদে সরকারের বিভিন্ন সুবিধাও গ্রহণ করেছেন তিনি। শুধু তিনি নন, তার স্ত্রী অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাও গ্রহণ করেছেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নানা সুবিধা। যার ফলে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। এ ছাড়াও তিনি ফারুকীর উপদেষ্টা হওয়ার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন। প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ড ফাজলামো না, এটা বোঝার মত কাণ্ডজ্ঞান থাকা উচিত। ফারুকী উপদেষ্টা হওয়ার কোন প্রকারের যোগ্যতা রাখেন না। এতটা বছর লীগের আস্থাভাজন থেকে কাজ পাওয়ার জন্য চেষ্টা করে গেছেন তিনি। ফ্যাসিবাদ একদিনে তৈরি হয় না, চুপ থেকে সমর্থন করার মধ্যেও ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়। এরকম প্রমাণ আরো অনেকের বিরুদ্ধেই আছে। প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনার জামিন সংক্রান্ত ভেতরের খবর আলাপ করলে অনেকের কাপড় খুলে যাবে।’

জানা যায়, নিজেকে ‘বঙ্গবন্ধুর ভক্ত’ হিসেবে বিভিন্ন লেখায় তুলে ধরেছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। প্রথম আলো পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে তাকে তার সবচেয়ে প্রিয় একটি বইয়ের কথা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইয়ের কথা উল্লেখ করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার প্রিয় বই অনেক। কিন্তু এখানে যেহেতু একটা বইকে বেছে নিতে হবে, সেহেতু বলব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনীর কথা। এটি প্রথম পড়েছিলাম বের হওয়ার পরপরই। কিছুদিন আগে একটা কাজে আবার পড়তে হয়েছে। বইটি আমার খুবই প্রিয়। কারণ, এটি আমার নিজেকে চিনতে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশের ডিসকোর্সটা কী, কোথা থেকে কেমন করে আমরা এলাম, তার উত্তর আছে এই অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে। আর এ বইয়ের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো বঙ্গবন্ধুর ভণিতাহীন বর্ণনা।’ এ ছাড়াও বিভিন্ন লেখায়, বক্তব্যে ফেসবুক পোস্টে শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নিজের মুগ্ধতার কথা প্রকাশ করেছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে নিয়েও অসংখ্যবার বিভিন্ন লেখায়, বক্তব্যে, ফেসবুক পোস্টে প্রশংসা করেছেন ফারুকী। লিখেছেন শেখ হাসিনাকে নিয়েও। শেখ হাসিনার লেখা ‘শেখ ফজিলাতুন নেছা-আমার মা’ শিরোনামে লেখার প্রশংসা করে তিনি রিভিউ পোস্ট করেছেন। সেখানে ফারুকী উল্লেখ করেছেন, ‘ইতিহাস বেশির ভাগ সময় বিজয়ী এবং পুরুষের চোখেই লেখা হয়। শেখ হাসিনার এই লেখাটায় একটা ভিন্ন জানালা দিয়ে আমাদের ইতিহাসটাকে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে। খুবই ইন্টারেস্টিং পার্সপেক্টিভ। পড়তে পড়তে অনেক জায়গায় আমার নিজের মাকে দেখতে পেয়েছি, নানাকে দেখতে পেয়েছি, মায়ের সংগ্রাম দেখতে পেয়েছি, বাবাকে দেখতে পেয়েছি। পার্থক্য হইলো, বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক কারণে কয়দিন পরপর জেলে যাইতেন আর আমার বাবা ব্যবসায় ধরা খাইতেন। দুই সময়ই বিরুদ্ধ স্রোতের মুখে সিনা টান করে তরী সামলাইতেন ‘মা’। বাঙলার বধূ এবং মায়েদের ইতিহাস বোধ হয় সবকালেই এক। দল-মত-নির্বিশেষে পড়তে পারেন।’

ফেসবুকে অসংখ্যবার তিনি আওয়ামী লীগ সকারের প্রশংসা করে পোস্ট করেছেন। পতিত সকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রশংসা করে ও ছবি দিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। এ রকম অসংখ্য পোস্ট এখন ফেসবুকে ঘুরছে, সমালোচনা করছে ফারুকীর।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর বিরুদ্ধে পতিত দল আওয়ামী লীগের ভোট চুরির নির্বাচন ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করার অভিযোগ রয়েছে অনেক আগে থেকেই। এ সম্পর্কিত একটি পোস্ট ভাইরাল হয় ফেসবুকে। প্রায় ২ হাজার লাইকের এই পোস্টে উল্লেখ আছে যে, সাবেক মেয়র আনিসুল হকের নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে ফারুকীর সংশ্লিষ্টতা। পোস্টে ফারুকীকে উপদেষ্টা বানানো জুলাই বিপ্লবের সাথে প্রতারণা বলেও উল্লেখ রয়েছে। পোস্টকারীর পরিচয় অ্যাক্টিভিস্ট সাদিকুর রহমান খান। ফেসবুকে তার প্রায় ১ লক্ষ ফলোয়ার রয়েছে।

সাদিকুর রহমান ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন,’ভোট চুরি করে মেয়র হওয়া আনিসুল হকের পক্ষে নির্বাচনী ক্যাম্পেইন করেছিলেন ফারুকী। ‘মুজিব’ সিনেমায় অভিনয় করার জন্য আরেফিন শুভর প্লট বাতিল হলো। অথচ ফারুকীর বউ নিজেও তো প্লট পেয়েছিলেন। তিনিও মুজিব মুভির অভিনেত্রী। তার প্লট তো বাতিল হয়নি কেন?

বিপ্লবের পরেও ফারুকী ৬ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ড. ইউনূসকে এসে দেখে যেতে বলেছিলেন, এবং বাড়িটি মেরামত ও জাদুঘরও চালু করতে বলেছিলেন ফারুকী। সেই ফারুকীকেই যদি মন্ত্রী করা হয়, তাহলে রাজপথে আওয়ামী লীগ ও মুজিববাদকেও ছেড়ে দেওয়া হোক। হাঁকডাক ডেকে, পোলাপাইনকে রাস্তায় আনবেন, আওয়ামী লীগ আর মুজিববাদকে দমন করার জন্য। পোলাপাইন সারা রাত, সারা দিন আওয়ামী লীগ পাহারা দেবে। আপনাদেরকে রক্ষা করবে। আর আপনারা এসি রুমে বসে মুজিবপূজারী ফারুকীর পুনর্বাসন করবেন। তাকে মন্ত্রী বানাবেন। তাহলে রাজপথেও মুজিববাদ পুনর্বাসন হোক। রাজপথে ‘প্রতিরোধ প্রতিরোধ খেলে’ ভোটচোরের পক্ষে ক্যাম্পেইন করা ফারুকীকে উপদেষ্টা বানানো হিপোক্রেসি এবং বিপ্লবের সঙ্গে প্রতারণা।”

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ঘনিষ্টজনেরা জানান, ব্যক্তিগতভাবে শেখ মুজিবুর রহমানকে খুবই পছন্দ করেন। এ ছাড়াও পতিত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক আছে তার। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তিনি সরকারের সঙ্গেেই ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলেন।

ফারুকীর স্ত্রী শেখ মুজিবকে নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। শেখ মুজিবের প্রতি ভালোবাসা থেকেও তিনি ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ৮৩ কোটি টাকা বাজেটের এই সিনেমায় মুজিব চরিত্রে অভিনয় করতে মাত্র ১ টাকা পারিশ্রমিক নেন আরিফিন শুভ। এবার জানা গেল, একই সিনেমায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ১ টাকা পারিশ্রমিক নেন নুসরাত ইমরোজ তিশাও।

এ বিষয়ে তিশা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এক টাকাও নিতাম না। চুক্তিতে লিখতে হবে, তাই নিয়েছি। আমি শুধু ভালোবাসার জায়গা থেকে সিনেমাটা করতে চেয়েছি। এখন মনে হয়েছে, যে ভালোবাসার কথা ভেবেছিলাম, তার চেয়ে অনেক বেশি পাচ্ছি। এর চেয়ে বড় সম্মানী কী হতে পারে?’ অনেকে অভিযোগ করেন, এ সিনেমায় অভিনয়ের সুবাদে প্লট বাগিয়ে নিয়েছেন তিশা। শুভর প্লট বাতিল হলেও তিশার প্লট বাতিল হয়নি।

জানা গেছে, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নির্মিত চলচ্চিত্র ‘শনিবার বিকেল’ আওয়ামী লীগ সরকার সেন্সরে আটকে দেয়। ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত চলচ্চিত্র বাংলাদেশ-জার্মানি-রাশিয়া যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘শনিবার বিকেলে’ মুক্তির অপেক্ষায় আছে অনেকদিন ধরেই। ২০১৯ সালে ছবিটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছিল ৪১তম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। তবে আওয়ামী লীগ সরকার এটি দেশে মুক্তি দেয়নি। যার ফলে পতিত শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে তৈরি হয় তার দূরত্ব।

শেখ হাসিনা সরকার টিকতে পারবেন না, ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না বুঝে ফারুকী ‘পল্টিবাজী’ করেন অভিযোগ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতাকর্মীদের। জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ফারুকীকে উপদেষ্টা করার সমালোচনা করেছেন।

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে নিয়ে তার লেখালেখি ও পোস্ট প্রসঙ্গে জানতে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ব্যক্তিগত ফোন নাম্বারে কল করা হয়। তবে তিনি তা রিসিভ করেননি।

ফারুকীকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ

সদ্য শপথ গ্রহণ করা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে উপদেষ্টা পদ থেকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অনতিবিলম্বে তাকে অপসারণ না করা হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন তারা।

রবিবার (১০ নভেম্বর)। রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন তারা।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, মুজিববাদী সরকারে’, ‘মুজিববাদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘ মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ, ‘ সাঈদ নূর আসাদ ভাই, দোসরের জায়গা নাই’, ‘মুজিববাদের ঠিকানা, বাংলাদেশে হবে না’,‘এক দুই তিন চার, ফারুকী তুই গদি ছাড়’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।’

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়ামের সঞ্চালনায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘বিগত সরকার মুজিববাদকে পুঁজি করে একটি ফ্যাসিস্ট সরকার গড়ে তুলেছিল। সেই ফ্যাসিস্ট শাসনের ভগবান ছিলেন মুজিব এবং তার প্রতীক ছিল ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি আর টুঙ্গিপাড়ার মাজার।’

তিনি আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী সেই ৩২ নম্বরের বাড়ি সংস্কার করতে বলেছিলেন। আমরা মনে করি, নতুন বাংলাদেশে সেই ভেঙে দেওয়া বাড়ি ভাঙাই রাখতে হবে। ফ্যাসিস্ট শাসনকে কীভাবে ছাত্রজনতা ভেঙে দিয়েছে তার প্রতীক হিসেবে থাকবে এই বাড়ি। মুজিবের প্রতি যাদের সহানুভূতি আছে তাদের ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৈরি হওয়া সরকারে থাকার কোনো অধিকার নেই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমরান শাহরিয়ার বলেন,‘তিন মাস আগে হাজার হাজার ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে গদিতে বসিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করছি এই সরকার আবারও ফ্যাসিবাদদের পুনর্বাসনে উঠে পড়ে লেগেছে। যারা আমাদের আহত ও নিহত ভাইদের মেরেছিল, সেই খুনিদের বিচার এখনও তারা করতে পারেনি। তার বদলে তারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছেন। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, আমাদের ভাইয়েরা জীবন দিয়ে ফ্যাসিবাদকে হটিয়ে আপনাদের যে ক্ষমতার আসনে বসিয়েছেন, ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করলে আপনাদের সেই ক্ষমতা থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে আনতে দ্বিধাবোধ করব না। আপনারা যেভাবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছেন, অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করবেন। গণহত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচার করুন এবং উপদেষ্টা পরিষদ থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিতাড়িত করুন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৫০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাসিস্টরা বিভিন্ন ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুকে ভগবানের রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রে মুজিবের বউয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর স্ত্রী অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। এ ছাড়াও ২০২১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বঙ্গবন্ধু’ চলচ্চিত্রেও রেণু চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিশা। ফারুকী তার স্ত্রীকে মুজিবের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করতে দিয়ে ফ্যাসিস্টদের তোষামোদি করেছেন। গণঅভ্যুত্থানের পরে ফারুকী ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেটি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। যাদের মধ্যে ফ্যাসিস্টদের রক্ত রয়েছে, ফ্যাসিস্টদের ধারণ করে তারা পট পরিবর্তনকালীন সময়ে ছাত্রদের পক্ষে থাকলেও ফ্যাসিবাদের ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। ছাত্র সমাজ এই ধরনের ফ্যাসিস্টদের সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে দেখতে চায় না।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

গভীর রাতে বোরখা পরে পালিয়েছেন ইডেন ছাত্রলীগ সভাপতি-সেক্রেটারি

নিজস্ব প্রতিবেদক: গভীর রাতে বোরখা পরে আবাসিক হল থেকে পালিয়েছেন রাজধানীর ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা। কোটা আন্দোলনকারী

শিক্ষার্থীরা পরিস্কার করে দেওয়ার পর চালু হলো স্বল্প পরিসরে এনায়েতপুর থানার কার্যক্রম

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: ছয়দিন পর চালু হলো সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানা পুলিশের আইনি কর্যক্রম। এর আগে শিক্ষার্থিরা বিধ্বংস থানা কম্পাউন্ড পরিস্কার করে ব্যবহার উপযোগি করেন। চালু করা হয়েছে 

‘আবার তেল-গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির আভাস’

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফের বাড়তে পারে অতি প্রয়োজনীয় তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম। এর মধ্যে বিদ্যুতের দাম গ্রাহক পর্যায়ে, আর গ্যাসের দাম উৎপাদন পর্যায়ে বাড়তে পারে।

ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বাবার মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শুনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবাও মারা গেছেন।মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি’) বিকেলে উপজেলার ছেঁউড়িয়া মণ্ডলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃতরা

ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার পর আত্মসমর্পণ করলেন বাবা

নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুরের কালীগঞ্জে কাউসার বাগমার (২৪) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছেন বাবা আব্দুর রশীদ বাগমার (৭৫) বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন

মার্কিন নির্বাচনের ব্যালট পেপারে থাকছে বাংলা ভাষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মার্কিন নির্বাচনে নিউইয়র্ক সিটির ব্যালটে ইংরাজি ছাড়াও চারটি ভাষা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলা ভাষা স্থান পেয়েছে। বাকি তিনটি ভাষা হলো- চাইনিজ,