জেমস আব্দুর রহিম রানা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ডামাডোল হতে না হতেই দরজায় কড়া নাড়ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন থেকে চলতি মাসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে এমন খবরে আগেভাগেই তৎপর হয়ে উঠেছেন মণিরামপুর উপজেলার সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরে সর্বত্রই এখন উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থিতা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তবে নির্বাচন থেকে দূরে সরে আছে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এখন পর্যন্ত আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে তাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছেনা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মণিরামপুর উপজেলা ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৫৫ হাজার ৯’শ ৭৩জন। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকার ঘোষণায় উপজেলা চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের অসংখ্য প্রার্থীর নাম প্রকাশ পাচ্ছে। চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান নাজমা খানম, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মিকাইল হোসেন। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সন্দ্বীপ ঘোষ ও শ্যামকুড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডিএম শরিফুল ইসলাম, মঞ্জুর আক্তার ও জার্মান আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক পিলাব মল্লিক (গোল্ডেন)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে- বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান কাজী জলি আক্তার, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আমেনা বেগম, বর্তমান সভাপতি আসমাতুন্নাহার, যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদা খাতুন, পৌর যুবলীগের সভাপতি হোমিও চিকিৎসক সুরাইয়া আক্তার ডেইজী ও পাপিয়া জামান।
এদিকে, নির্বাচনী ডামাডোল বাজার সাথে সাথেই নির্বাচনী ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েয়েছেন সম্ভাব্য সকল প্রার্থী। তারা দিন-রাত উপজেলাব্যাপী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, করছেন গণসংযোগ। এসকল কার্যক্রমের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। কেউ কেউ চালাচ্ছেন মিডিয়া ক্যাম্পেইন। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে জানান দিচ্ছেন আসছে নির্বাচনে তিনি প্রার্থী। অনেকে প্রচার-প্রচারণাকালে ছড়িয়ে দিচ্ছেন হ্যান্ডবিলও। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। অধিকাংশই বলেছেন, নির্বাচনে যে কেউই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এটা নাগরিকের মৌলিক অধিকার। তবে, এবারের নির্বাচনে মণিরামপুরের মানুষ আর কোনো অতিথি পাখি বা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো মানুষকে নেতা হিসেবে মেনে নেবে না। বিশেষ করে যারা উপজেলার সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখের সময় পাশে থাকেন না, যাদের কাছে যাওয়া যায় না তেমন কোনো মানুষ যদি নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান তাহলে তারা জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত হবেন বলেও মত দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। সম্ভাব্য প্রার্থী কারা জানতে চাইলে বেশি নাম এসেছে বর্তমান চেয়ারম্যান নাজমা খানম, প্রভাষক ফারুক হোসেন, আমজাদ হোসেন লাভলু, মিকাইল হোসেনে। তারা উপজেলাব্যাপী বেশ পরিচিত। তারা প্রার্থী হলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাময় হবে বলেও মনে করেন ভোটাররা। অন্যদিকে, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কাজী জলি আক্তার, আমেনা বেগম ও মাজেদা খাতুন প্রার্থী হলে এই পদেও ভোট হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাময়।
বর্তমান চেয়ারম্যান নাজমা খানম বলেন, ‘আমি নৌকার প্রার্থী হয়ে বর্তমানে চেয়ারম্যান আছি। গত নির্বাচনে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সেসব শতভাগ বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছি। আগামী দিনে আবারও সুযোগ পেলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাবো।’ মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেনের কাছে নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন করার প্রত্যাশা করতেই পারি, দলের জন্য আমি ও আমার পরিবার অনেক কিছুই করেছি। আমি আশাবাদী দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের যে সাড়া পাচ্ছি তাতে আমি বিজয়ী হবো।