
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপিতে যে কমিটি নিয়ে নাটক চলছে, সেই নাটকের পেছনে রয়েছে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার অর্থলোভ। টাকার জন্যই তিনি কমিটিগুলো ভাঙছেন, নতুন কমিটি করছেন। বিএনপির বিভিন্ন পদ এখন রীতিমতো নিলামে উঠেছে। যদিও বলা হচ্ছে যে, আন্দোলনের ব্যর্থতার জন্যই যারা নিষ্ক্রিয় তাদের বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে কিন্তু বাস্তবতা হলো এই যে, আন্দোলনের ব্যর্থতার কথাই যদি বলা হবে, তাহলে এতদিন পরে কেন কমিটিগুলো বাতিল করা হচ্ছে। সেটি তো ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পরপরই করার কথা ছিল।
বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপির বিভিন্ন কমিটি ভাঙা গড়ার খেলা চলছে মূলত অর্থ আহরণের জন্য। ঈদের আগে তারেক জিয়া পদ বাণিজ্য করে শত কোটি টাকা উপার্জন করার একটি মিশনে নেমেছেন।’
নানা কারণে তারেক জিয়া এখন অর্থ সংকটে ভুগছেন। গত নির্বাচনের আগেও যেমন বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা লন্ডনে তারেক জিয়াকে অর্থ পাঠাতেন, এখন সেই অবস্থা নেই। নির্বাচনের পর এই সরকার স্থিতিশীল এবং সরকারের ওপর কোন চাপ নেই, এটা ব্যবসায়ীরা ভালো করেই বুঝতে পেরেছেন। আর এ কারণেই তারেক জিয়াকে যারা এতদিন গোপনে টাকা দিয়েছিলেন তারা এখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তারা মনে করছেন যে, তারেক জিয়ার জন্য বিনিয়োগ কোনভাবেই লাভজনক নয় বরং একটি ঝুঁকিপূর্ণ। সরকার যদি শেষ পর্যন্ত জানতে পারে যে, তারেক জিয়াকে তারা টাকা দিচ্ছেন তাহলে তারাই বিপদে পড়তে পারে। এ কারণে নির্বাচনের পর থেকে গত পাঁচ মাসে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তারেক জিয়ার চাঁদাবাজি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে’।
তারেক জিয়াকে যারা বিভিন্নভাবে টাকা পয়সা দিত বিএনপিপন্থি ব্যবসায়ী এবং নেতারা তারাও নির্বাচনের পর নানা রকম চাপে আছে। তাদের পক্ষে এখন তারেক জিয়াকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে তারেক জিয়া এখন বিএনপিকেই জিম্মি করে তার নিজের বিলাসবহুল জীবনযাপন অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা নিয়েছেন। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই তিনি এই কমিটি নাটক সাজিয়েছেন বলে অনেকে মনে করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপিতে যে কয়েকজনকে ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টামণ্ডলীতে আনা হয়েছে তারা সকলেই তারেক জিয়াকে বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়েছেন। ৫০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত পদ বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে। ঢাকায় তারেকের অন্তত পাঁচজন এজেন্ট এই অর্থ সংগ্রহ করছেন এবং এই সমস্ত এজেন্টের মাধ্যমে লন্ডনে টাকা পাচার করা হচ্ছে। লন্ডনে এই টাকা পৌঁছানোর পরপরই তারেক জিয়া কমিটিতে কাউকে নিচ্ছেন আবার কাউকে বাদ দিচ্ছেন।’
বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপিতে পদ এবং কমিটির বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। যে যত বেশি টাকা দিচ্ছে তিনি তত ভালো পদে যাচ্ছেন। আর এ কারণেই বিএনপির নেতাদের মধ্যে ঈদের আগে টাকা সংগ্রহের হিড়িক পড়েছে।’
বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতারা বলছেন, এমন নেক্কারজনক ভাবে বাণিজ্য লেনদেন এবং অর্থ সংগ্রহের ঘটনা আগে কখনও ঘটে। একটি রাজনৈতিক দল কতটা দেউলিয়া হলে সেই দলের প্রধান দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করতে পারে তা কল্পনাও করা যায় না। বিএনপিতে এখন সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় সরকারবিরোধী আন্দোলন নয়, সকলে আলোচনা করছে কে কত টাকা দিয়ে কোন পদ পেলো। আর পদ পাওয়ার জন্য টাকা কাকে দিতে হবে সে সম্পর্কে তথ্যাদি বিএনপি নেতাদের এখন মুখে মুখে। এই কমিটি বাণিজ্য এবং পদ বাণিজ্য করে দলের অস্তিত্ব শেষ পর্যন্ত থাকবে কি না সে নিয়েও কেউ কেউ সংশয় প্রকাশ করেছেন।’