ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। এমপি আনোয়ারুল আজীম (আনার) হত্যায় গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামি- শিমুল ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, এমপি আনারকে হত্যা করার আগে কলকাতার সেই ফ্ল্যাটে ওঠেন শিলাস্তি রহমান। তার দায়িত্ব ছিল এমপি আনার ফ্ল্যাটে গেলে তাকে রিসিভ করা। শিলাস্তি রহমান সেটাই করেন। শিলাস্তি রহমান রিসিভ করার পর থেকে আর এমপি আনারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার (৩১ মে’) আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ওয়ারী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান। ৮ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তারকৃত শিমুল ভূঁইয়া (৫৬) জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল) শীর্ষস্থানীয় নেতা। তিনি খুলনা, জিনাইদহ, যশোরসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে তথা দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তাদের নিষিদ্ধ দলের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে ভুক্তভোগীর আদর্শগত বিরোধ ছিল। ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান ওরফে শাহিনের সঙ্গেও আনারের বিরোধ ছিল।
এই দুই বিরোধকে কেন্দ্র করে শাহিন ও শিমুল ভূঁইয়া আনারকে হত্যা জন্য পরিকল্পনা করে আসছিলেন। গত জানুয়ারি ও মার্চ মাসে দুবার তাকে হত্যার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। পরে শাহিন কলকাতার নিউটাউন অভিজাত এলাকায় গত এপ্রিল মাসের ২৫ তারিখে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। সেই পরিকল্পনায় যুক্ত হন শিলাস্তি রহমান। পরে তাদের সঙ্গে হত্যা পরিকল্পনার মিটিং করে শাহিন গত ১০ এপ্রিল বাংলাদেশে চলে আসেন।
শিমুল ভূঁইয়া ও শাহিনের নির্দেশে অন্য আসামিরা আনারকে কৌশলে ব্যবসার কথা বলে কলকাতার ওই ফ্লাটে নিয়ে যান। পরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শিমুল ভূঁইয়া অন্য আসামিদের সহায়তায় আনারকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তার মরদেহের হাড় মাংস আলাদা করে, মাংসের ছোট ছোট টুকরো করে ফ্লাটের টয়লেটের কমোডে ফেলে ফ্লাশ করা হয়। এছাড়া হাড়সহ শরীরে অন্যান্য অংশ ট্রলিব্যাগে করে কলকাতার নিউটাউন থেকে দূরে একটি খালে ফেলে দেওয়া হয়।’