ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: রাব্বীর চাঁদাবাজির টাকায় ভাগ বসাতে চেয়েছিলেন রাসেল। বিষয়টি নিয়েই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। পরিকল্পনা করা হয় রাব্বীকে হত্যার। কেরানীগঞ্জের চাঞ্চল্যকর রাসেল হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল হোতা রাব্বীসহ ১২ জনকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য।
প্রাণে বাঁচতে নিজের বন্ধুকে বাবা ডাকার পরও নিস্তার মেলেনি নির্যাতন থেকে। বরং রাত যত গভীর হয়েছে নির্যাতনের মাত্রা ততই বেড়েছে। ১০ জানুয়ারি রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেলঘাট এলাকায় চলে নির্মম নির্যাতন। তেলঘাটের পারভীন টাওয়ারের নিচতলায় আফতাব উদ্দিন রাব্বীর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ঘটে এই নৃশংস ঘটনা।
আফতাব উদ্দিন রাব্বী দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। যদিও এ ঘটনার পর তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম সাইফুল ইসলাম ওরফে রাসেল।
রাসেলের স্ত্রী জানান, নির্যাতনের একপর্যায়ে জ্ঞান হারান রাসেল। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে হাসপাতালে না নিয়ে নির্যাতনকারীরা বরং মেতে ওঠেন খোশগল্পে। জ্ঞান ফেরার পর আবারও শুরু হয় নির্যাতন। খবর পেয়ে ছুটে আসেন রাসেলের স্ত্রী। স্বামীকে কেন মারা হচ্ছে জানতে চাইলে দাবি করা হয় ২০ লাখ টাকা।
ঘটনার সাত দিন পর চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল হোতা রাব্বীসহ ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছিল। অজ্ঞাতনামা আসামি ছিল ১০ থেকে ১৫ জন।
নিহত রাসেলের পরিবারের দাবি, ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে ‘টর্চার সেল’ বানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আফতাব উদ্দিন ওরফে রাব্বী। চাঁদা না পেলে তার ‘আব্বা বাহিনী’ দিয়ে মানুষকে তুলে এনে সেখানে নির্যাতন চালানো হতো।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর রাব্বীসহ তার পাঁচ সহযোগী সীমান্ত পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করেছিল। তাদের ঝিনাইদহ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের দেয়া তথ্যে বাকিদের গ্রেফতার করা হয়েছে ভোলা থেকে।’
রাব্বীর সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের শিকার রাসেলের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। পুলিশ বলছে, আর্থিক লেনদেন কেন্দ্র করেই মূলত দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। রাব্বির চাঁদাবাজির টাকায় হাত দেয়ার কারণেই খুন করা হয়েছে রাসেলকে।
রাসেল হত্যায় জড়িত বাকিদেরও দ্রুত গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার। মূল অভিযুক্ত রাব্বীর বাবা বাছের উদ্দিন শুভাঢ্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তার চাচা ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।