ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি, ‘আমার পথ’ দিবস। আমি কারও ধার ধারি না কারণ আমার পথে আমি চলি। আমরা নিজেদের ব্যাপারে এমন করে ভাবি। ভাবতে অন্তত পছন্দ করি। নিজের সিনা টান করে, চোখে-মুখে প্রবল আত্মবিশ্বাস এনে, আঙুল নাচিয়ে বলতে বড্ড ভালো লাগে-আমার জীবন, আমার চলার পথ আমিই ঠিক করব।
তবে আদতে কিন্তু তা হয় না। আমাদের চলার পথ আমরা ঠিক করতে পারি না। নিজের পছন্দের পথে আমরা চলতে পারি না। জন্মের পর থেকেই আমাদের ‘চলার পথ’ ঠিক করে দেওয়ার জন্য ধাপে ধাপে দাঁড়িয়ে থাকেন অন্য কেউ। মা-বাবা, গুরুজন, শিক্ষক কিংবা জীবনসঙ্গী। ফলে মানুষ যে একটা সম্পূর্ণ ‘স্বতন্ত্র একক সত্তা’, তা ব্যক্তিমানুষটি নিজেই ভুলে যান একসময়।
ভেতরে রবীন্দ্রনাথ হয়ে ওঠার সত্তা নিয়ে কেউ হয়ে যান উকিল, চিকিৎসক কিংবা প্রকৌশলী। রোদ্দুর হতে চাওয়া অমলকান্তি হয়ে যান ছাপাখানার শ্রমিক। নচিকেতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কেউ গাইতেই পারেন-‘আমি ভবঘুরেই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশন।’ তবে সুরে সুরে চিৎকারই সার। আপনার বোকা বোহেমিয়ান, খ্যাপাটে বাউন্ডুলে কিংবা আউলা-বাউল হতে চাওয়ার শখ মিটিয়ে দেবে চারপাশের গূঢ় বাস্তবতা।
তবে সবার জীবনের গল্পই যে এক তা নয়। কেউ কেউ নিজের পথে চলেন। শত ভ্রুকুটি আর শাসনের বেড়াজাল ডিঙিয়ে ঠিক হেঁটে চলেন নিজস্ব পথে। তবে এ ক্ষেত্রে একটা বিষয় স্পষ্টভাবে বুঝে নেওয়া জরুরি। তা হচ্ছে, নিজের মতে আর পথে চলতে গিয়ে যেন অন্যের ক্ষতির কারণ হয়ে না দাঁড়াই।
আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি, ‘আমার পথ’ দিবস। মার্কিন দম্পতি টমাস ও রুথ রয়ের হাত ধরে দিনটির চল ঘটে। নিজের মতো থাকা, সময় কাটানো, নিজের ইচ্ছানুযায়ী কাজ করা-মানুষের জন্মগত এই অধিকার ও সহজাত প্রবৃত্তির প্রতি সম্মান জানাতে দিবসটি চালু করেন তাঁরা। দিনটি কিন্তু পালন করতে পারেন। আজ অন্তত নিজের পথে, নিজের মতে, নিজের মতো চলুন। তবে এই চলতে গিয়ে সমাজবিরুদ্ধ, অশোভন ও অনৈতিক কিছু করবেন না কিন্তু।’