
নিজস্ব প্রতিবেদক: গত ২০ মে মধ্যরাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ম্যাথিউ মিলারের দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, তিন ভাইকে অবৈধভাবে কাজ পাইয়ে দেয়া এবং তাদের অপরাধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে সাবেক এই সেনা প্রধানের বিরুদ্ধে।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এটিকে নিশিরাতের স্যাংশন হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, লু আসলেন শান্তির বার্তা নিয়ে, ফিরে গিয়ে দিলেন স্যাংশন।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, দেশের অংশ ভাড়া দিয়ে আমি ক্ষমতায় যেতে চাই না। স্পষ্টতই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। অবশ্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর এটিকে ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি এটিও দাবি করেছেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকেই বাংলাদেশকে অবহিত করেছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছিলেন, এটি ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা। এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর দিয়ে থাকে। তবে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলোর নির্মোহ এবং সুষ্ঠু তদন্ত চায় বলে জানা গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর এবং ওয়াশিংটনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসকে এই বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।’
একজন কূটনীতিক বলেছেন, এর আগে ২০২১ সালে যখন র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল তখনও বলা হয়েছিল র্যাবের বিরুদ্ধে যে আনিত অভিযোগগুলো রয়েছে বিশেষ করে গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড তার নির্মোহ তদন্ত করা দরকার এবং র্যাবের শুদ্ধিকরণের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছিল। এখন র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে কি না তা নির্ভর করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে মানদণ্ড এবং শুদ্ধিকরণ ফর্মুলা দিয়েছিল তার কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে তার ওপর।
একইভাবে আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উঠেছে, সেই অভিযোগগুলো নির্মোহ তদন্ত সরকারকে করতে হবে বলেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনোভাব ব্যক্ত করেছে’। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উত্থাপন করা হয়েছে সে অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে তিনি বিজিপির প্রধান এবং সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় প্রভাব খাটিয়ে তার তিন ভাইদের অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করছেন।
অভিযোগ উঠেছে যে, তার ভাইদের মধ্যে অন্তত একজন তাদের নাম, পিতার নাম এবং ঠিকানা বদলে জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট করেছেন। এটি যদি সত্যি হয় তাহলে সরকারকে তদন্ত করতে হবে। তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছিল আজিজ আহমেদ বিজিপির প্রধান এবং সেনাপ্রধান থাকা অবস্থাতে প্রভাব খাটিয়ে তার ভাইদেরকে বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেছেন। এই অভিযোগের ব্যাপারেও তদন্ত চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত এই অভিযোগ গুলোর ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আনিত অভিযোগ গুলো তদন্ত করা হবে কি না সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন বার্তা
দেয়া হয়নি।’