নিজস্ব প্রতিবেদক: যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অধীনে ছয় মাস মেয়াদি অনাবাসিক প্রশিক্ষণের একটি কোর্স হচ্ছে ‘মডার্ন অফিস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন’। তবে মেহেরপুর জেলায় এটির কোনো কার্যক্রম নেই। ফলে নেই কোনো প্রশিক্ষণার্থীও। সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন নিজ আত্মীয়ের সুবিধার্থে কুষ্টিয়া থেকে নিজ জেলা মেহেরপুরে পোস্টিং করিয়ে ঘরে বসিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন তিনি। এরপর থেকে ৫ বছর ধরে অফিসে না গিয়ে প্রতিমাসের বেতন ৮০ হাজার টাকা তুলে নিচ্ছেন মেহেরপুর জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর (অফিস কাম ম্যানেজমেন্ট) মাহমুদা খাতুন।
জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, মাহমুদা খাতুনের পোস্টিং কুষ্টিয়ায়। সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর (অফিস কাম ম্যানেজমেন্ট) প্রশিক্ষক এটা নবম গ্রেড পদ। মেহেরপুরে এই পদ এবং বিভাগ না থাকায় দায়িত্বও নেই। মাহমুদা খাতুন সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সম্পর্কে ভাবি। সেই সুবাদে মন্ত্রী যে কোনো উপায়ে তাকে নিজ জেলা মেহেরপুরে বদলির জোর সুপারিশসহ ডিজিকে চাপ দিলে কর্তৃপক্ষ মেহেরপুরে প্রেষণে তাকে বদলি করতে বাধ্য হন। ফলে, এই কর্মকর্তাকে অফিস যেতে হয় না। কোনো দায়িত্বও নেই। কিন্তু প্রতিমাসে সর্বসাকুল্যে সরকারি মাসিক বেতন হিসেবে পান ৮০ হাজার টাকা।’
এ বিষয়ে মেহেরপুর জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ফিরোজ আহমেদ জানান, বৃহত্তর কয়েকটি জেলায় এই পদ আছে। মেহেরপুরে এই পদ ও বিভাগ নেই। তাই ইন্সট্রাক্টর (প্রশিক্ষক) হিসেবে তাকে কোনো দায়িত্বপালন করা লাগে না মাহমুদা খাতুনকে। জনপ্রশাসন মন্ত্রীর চাপে তাকে প্রেষণে এখানে পদ না থাকা সত্ত্বেও বদলি করা হয়েছে। তাই কি করবেন অফিসে এসে? মাসে দুই একদিন অফিসে আসেন ঘুরতে। প্রায় ৫ বছর এভাবেই আছেন। নবম গ্রেড কর্মকর্তা হিসেবে তার সর্বসাকুল্যে বেতন, বোনাস, উৎসবভাতা মিলিয়ে গড়ে ১ লাখ টাকা পান।
এ প্রসঙ্গে সিনিয়র ইন্সটেক্টর (অফিস কাম ম্যানেজমেন্ট) কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুন বলেন,‘সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী মেহেরপুরের এমপি ফরহাদ হোসেন আমার পরিচিত। মন্ত্রীর সুপারিশে আমি মেহেরপুরে প্রেষণে বদলি হয়ে এসেছি। আমি যে বিষয়ের প্রশিক্ষক এখানে সেই পদ ও বিভাগ নেই। তাই কাজ নেই। ফলে নিয়মিত অফিসে যাওয়া প্রয়োজন পড়ে না। স্যার কোনো কাজে অফিসে যেতে বললে আমি যাই।’
কাজ বা অফিস না করে বেতন উত্তোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘পদ ও বিভাগ না থাকলে কি দায়িত্বপালন করবে একজন ইন্সট্রাক্টর (প্রশিক্ষক) ? থাকা না থাকা এটা আমার বিষয় না কর্তৃপক্ষের বিষয়।’